কবিতার খাতা - ৩

কবি - রাজীব ভট্টাচার্য
শিলচর, আসাম
নদী বিষয়ক একটি রূপক
ততক্ষণ মাথা নীচু করে সব মেনে
নেওয়া যায়,
যতক্ষণ ভাবনার বিনিময় থাকে,
ততক্ষন ভাসানের আয়োজনেও
ভালোবাসা থাকে ।
ইচ্ছের নদী ছিলো একদিন
ছিল ডুব সাঁতরে নদীর সাথে
অনাবিল জলকেলি ।
নদী আঁকড়ে আজীবন বাঁচতে চেয়েছে
মানুষ,নদীমাতৃক সভ্যতা,কৃষিকাজ সেই
সার সত্য জানি ।
তারপর একদিন জলের টানে বৃষ্টির
অবগাহনে নদী ফুলে ফেঁপে উঠে, জলের
প্রতি তার নাড়ীর টান তাকে আহংকারী
করে তুলে ।
নিজস্ব লাথিতে প্রথমে সে ভাঙে
পাড়ে গড়ে উঠা মানুষের সাথে তার
সাজানো ঘর !
পাড় ভাঙার খেলায় সে মাহির হয়ে
উঠেছে যখন ,
সাগরের মোহ তাকে নেশাতুর করে
অসম খেলায় সে তার পবিত্র গতিপথে
পাপের প্রবল বন্যা নিয়ে ধ্বংসের মত
বয়ে যায়...
ততদিনে তার অতলে মাছের মত
ছটফট করতে থাকা মাথা নত মানুষটি
ডুবে যাওয়া সভ্যতার শৈবাল বিজড়িত
শিলালিপির নীচে চাপা পড়া থেকে
বেরিয়ে আসে,
খড়কুটো আঁকড়ে ধরে প্রাণপণ চেষ্টায়
নদী সাঁতরে উঠে এসে দেখে, তার জন্য
এখনো কেউ প্রতীক্ষা করে আছে আর
অনুভব করে সে এখন মাথা উঁচু করে
বাঁচতে শিখে গেছে বৃক্ষের মত
ঋজুতায় ।